Sunday, August 14, 2011

১৩ আগস্ট তারেকের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-08-15/news/178148জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়,তারেক মাসুদ
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়,তারেক মাসুদ


জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়,তারেক মাসুদ
তারেক মাসুদের সঙ্গে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের অন্যতম জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। তারেক মাসুদকে নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে

জয়ন্তদা, জানি, এ সময় কিছু বলা কী কষ্টের। তার পরও জানতে চাই, দুর্ঘটনার সংবাদটা কখন পেলেন?
আমি ওই সময় ছিলাম একটা রেকর্ডিং স্টুডিওতে। ৩৫-৪০ মিনিট পর বের হয়ে দেখি ফোনে ৩৯টা মিসডকল! ৩৫-৪০ মিনিটের মধ্যে! মিসডকল তালিকায় দেখি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আবু সাইয়ীদ, রোকেয়া প্রাচীসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেক মানুষের নাম। এ সময় আবার ফোন এল। পাশেই ছিল জানেসার ওসমান। ওর ফোনেও তখন কল এসেছে। ও বলছে, অ্যাকসিডেন্ট! অ্যাকসিডেন্ট! তখনো বুঝিনি কী হয়েছে। তারপর ফোনেই জানলাম তারেক নেই, মিশুক নেই।
জয়ন্তদা, আপনার খুব কাছের মানুষ ছিলেন তাঁরা...
ও কথা শোনার পর আমার মাথা ফাঁকা হয়ে গেল। এই তো কিছুদিন আগে তারেকের বাবা মারা গেলেন। ও ফরিদপুর থেকে ফোনে বলল, ‘দাদা আমি আসছি। এসেই কাগজের ফুল ছবিটার শুটিং করব।’ এই ছবি করার কথা ছিল আরও আগে। সে সময় বর্ষা দেরি করে আসায় শুটিং পিছিয়ে গিয়েছিল। তারেক বলল, এই ফাঁকে আর একটা ছবি তৈরি করে ফেলি। একটি নয়, নরসুন্দর আর রানওয়ে তৈরি করল ও।
আপনাদের মধ্যে কবে শেষ কথা হয়েছে?
১১ আগস্ট। ও বলেছিল ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ওর বাড়িতে যেতে। ও যে মিশুকদের নিয়ে শুটিং লোকেশন দেখতে যাচ্ছে, সেটা আমাকে বলেনি। কাগজের ফুল নিয়ে ওর অনেক প্রত্যাশা ছিল। জানো, ব্যক্তি হিসেবে তো তারেক শুধু পরিচালক হতে চায়নি, চেয়েছিল বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পর্যায়ে নিয়ে যেতে। এ ছাড়া মানুষকে সিনেমাহলমুখী করার জন্য তাঁর একটা স্বপ্ন ছিল। এ রকম কাকতালীয় ঘটনাও ঘটে? যে লোকগুলো আমাদের সিনেমায় ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন, তাঁদের সবার অপঘাত মৃত্যু হয়েছে। জহির রায়হান, আলমগীর কবিরের পর সে তালিকায় যুক্ত হলেন তারেক মাসুদ।

No comments:

Post a Comment