http://www.bd-pratidin.com/?view=details&type=gold&data=Cook&pub_no=469&cat_id=3&menu_id=12&news_type_id=1&index=1
জাকারিয়া সৌখিন
জাকারিয়া সৌখিন
কান, মাথা আর মনের মধ্যে শুধু একটি কণ্ঠ বেজেই যাচ্ছে। তারেক ভাই [নির্মাতা তারেক মাসুদ], আপনার ভরাট কণ্ঠস্বরটি আমাকে ছাড়ছে না। যন্ত্রণা দিয়ে অসহায় করে তুলেছে। এই দিনচারেক আগেও আপনার সঙ্গে কথা হয়েছিল। 'কাগজের ফুল' চলচ্চিত্র নিয়ে আপনি বললেন, 'একটা সুন্দর স্পটের খোঁজ পেয়েছি। গিয়ে দেখি কেমন।' আরও বললেন, 'সবকিছু ফাইনাল হলে একটা খবর করে দিও।' তারেক ভাই, আমি আপনার সবকিছু ফাইনাল হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম_ 'কাগজের ফুল' নিয়ে নিউজ করব। কিন্তু হলো না। তার আগেই আপনাকে নিয়ে একটি কঠিন বাস্তবে অপ্রিয় নিউজ করতে হলো। আপনার মৃত্যুর খবর লিখতে হলো।
তারেক ভাই, আপনি শুটিং স্পট দেখতে গিয়েছিলেন মানিকগঞ্জে। হয়তো স্পট আপনার পছন্দও হয়েছিল। কিন্তু সেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার আগেই আপনাকে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে যেতে হলো। আপনার মৃত্যুর খবর কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাইকে ফোন দিলে তার 'হ্যালো' না শুনে কান্নার শব্দ শুনতে পাই। তিনি ঘিওরের [দুর্ঘটনা স্থান] দিকে ছুটতে ছুটতে কাঁদছেন। আরও কয়েকজনের ফোন পাই। নিশ্চিত হই, ঘটনা সত্য। এরপর থেকে আপনার ভরাট কণ্ঠস্বর আমাকে আর ছাড়ছে না। যন্ত্রণা দিয়ে অসহায় করে তুলেছে। মানুষ চলে যায়_ এটা চিরসত্য; কিন্তু এভাবে চলে যায় কেউ! অব্যবস্থা আর অনিয়ন্ত্রণের ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই ঝরে যাচ্ছে অনেক হতভাগ্যের প্রাণ। তারেক ভাই, আপনিও আজ সেই দলে। বরেণ্য নির্মাতা আর শুদ্ধ মানুষ হয়ে আপনি হতভাগা।
নিশাদ মাসুদ_ আপনার দেড় বছর বয়স ছুঁই ছুঁই পুত্র। বাসায় ফিরলে আপনার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ত নিশাদ। আধো আধো উচ্চারণে আপনাকে বাবা বলে ডাকত; গলা জড়িয়ে ধরত। নিশাদের কণ্ঠে সম্পূর্ণ উচ্চারণে 'বাবা' ডাক শোনার আগেই আপনি চলে গেলেন। আপনার জীবনসঙ্গী ক্যাথরিন মাসুদ সুস্থ হয়ে ফিরবেন। তিনি নিজেকে এবং অবুঝ নিশাদকে কিভাবে সান্ত্বনা দেবেন! তারেক ভাই, আপনি নেই। কিন্তু আপনার 'মাটির ময়না', 'মুক্তির গান', 'অন্তর্যাত্রা'সহ অনেক সৃজনশীল কাজ রয়ে গেছে। মানুষ [প্রজন্মের পর প্রজন্ম] একদিন বলবে, এ দেশে বরেণ্য এক নির্মাতা ছিল। তার নাম তারেক মাসুদ। কিন্তু আপনার স্ত্রী-পুত্র কী বলবে? নিশ্চয়ই আপনার হাস্যোজ্জ্বল ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বলবে, নিয়মনীতির তোয়াক্কাহীন এই দেশের অনিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাই কেড়ে নিয়েছে আপনার প্রাণ। আপনি প্রচণ্ড দেশপ্রেমিক মানুষ। নিশ্চয়ই আপনি আপনার প্রিয় দেশ নিয়ে স্ত্রী-পুত্রের এ কথা শুনবেন। কিন্তু রাগ করতে পারবেন না। কারণ তাদের অভিমানই সঠিক।
তারেক ভাই, আপনি নিজেই একটি পরিস্ফুটিত সুগন্ধী ফুল। কিন্তু কাগজের ফুল ফোটাতে গিয়ে হয়ে গেলেন ঝরা-ফুল। ঝরে পড়া সুগন্ধী ফুলেও ঘ্রাণ অবশিষ্ট থাকে। আপনার কাজ থেকে আমরা আজন্ম ঘ্রাণ নিব তৃপ্তির সঙ্গে। শুনেছি ওপারে ভালো মানুষেরা ভালো থাকে। নিশ্চয়ই আপনিও ভালো থাকবেন। আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।
তারেক ভাই, আপনি শুটিং স্পট দেখতে গিয়েছিলেন মানিকগঞ্জে। হয়তো স্পট আপনার পছন্দও হয়েছিল। কিন্তু সেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার আগেই আপনাকে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে যেতে হলো। আপনার মৃত্যুর খবর কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাইকে ফোন দিলে তার 'হ্যালো' না শুনে কান্নার শব্দ শুনতে পাই। তিনি ঘিওরের [দুর্ঘটনা স্থান] দিকে ছুটতে ছুটতে কাঁদছেন। আরও কয়েকজনের ফোন পাই। নিশ্চিত হই, ঘটনা সত্য। এরপর থেকে আপনার ভরাট কণ্ঠস্বর আমাকে আর ছাড়ছে না। যন্ত্রণা দিয়ে অসহায় করে তুলেছে। মানুষ চলে যায়_ এটা চিরসত্য; কিন্তু এভাবে চলে যায় কেউ! অব্যবস্থা আর অনিয়ন্ত্রণের ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই ঝরে যাচ্ছে অনেক হতভাগ্যের প্রাণ। তারেক ভাই, আপনিও আজ সেই দলে। বরেণ্য নির্মাতা আর শুদ্ধ মানুষ হয়ে আপনি হতভাগা।
নিশাদ মাসুদ_ আপনার দেড় বছর বয়স ছুঁই ছুঁই পুত্র। বাসায় ফিরলে আপনার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ত নিশাদ। আধো আধো উচ্চারণে আপনাকে বাবা বলে ডাকত; গলা জড়িয়ে ধরত। নিশাদের কণ্ঠে সম্পূর্ণ উচ্চারণে 'বাবা' ডাক শোনার আগেই আপনি চলে গেলেন। আপনার জীবনসঙ্গী ক্যাথরিন মাসুদ সুস্থ হয়ে ফিরবেন। তিনি নিজেকে এবং অবুঝ নিশাদকে কিভাবে সান্ত্বনা দেবেন! তারেক ভাই, আপনি নেই। কিন্তু আপনার 'মাটির ময়না', 'মুক্তির গান', 'অন্তর্যাত্রা'সহ অনেক সৃজনশীল কাজ রয়ে গেছে। মানুষ [প্রজন্মের পর প্রজন্ম] একদিন বলবে, এ দেশে বরেণ্য এক নির্মাতা ছিল। তার নাম তারেক মাসুদ। কিন্তু আপনার স্ত্রী-পুত্র কী বলবে? নিশ্চয়ই আপনার হাস্যোজ্জ্বল ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বলবে, নিয়মনীতির তোয়াক্কাহীন এই দেশের অনিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাই কেড়ে নিয়েছে আপনার প্রাণ। আপনি প্রচণ্ড দেশপ্রেমিক মানুষ। নিশ্চয়ই আপনি আপনার প্রিয় দেশ নিয়ে স্ত্রী-পুত্রের এ কথা শুনবেন। কিন্তু রাগ করতে পারবেন না। কারণ তাদের অভিমানই সঠিক।
তারেক ভাই, আপনি নিজেই একটি পরিস্ফুটিত সুগন্ধী ফুল। কিন্তু কাগজের ফুল ফোটাতে গিয়ে হয়ে গেলেন ঝরা-ফুল। ঝরে পড়া সুগন্ধী ফুলেও ঘ্রাণ অবশিষ্ট থাকে। আপনার কাজ থেকে আমরা আজন্ম ঘ্রাণ নিব তৃপ্তির সঙ্গে। শুনেছি ওপারে ভালো মানুষেরা ভালো থাকে। নিশ্চয়ই আপনিও ভালো থাকবেন। আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।
No comments:
Post a Comment